Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

Title
হরিনা কাশীরায়ের রাজ বাড়ী
Location

হরিনা , হাটফুলবাড়ী, সারিয়াকান্দি ,বগুড়া।

Transportation

অটোরিকসা, সিএনজি ভ্যান

Contact

হরিনা , হাটফুলবাড়ী, সারিয়াকান্দি ,বগুড়া।

Details

সারিয়াকান্দি উপজেলার হাট ফলবাড়ি ইউনিয়নের হরিণা গ্রামে দুশো বছরের পুরান ও ঐতিহ্যবাহী জমিদার বাড়িটি সংরণের অভাবে ধ্বংস হতে চলেছে। পরিত্যক্ত পড়ে থেকে বাড়িটি বেদখলও হচ্ছে। বাড়িটি মুক্তিযুদ্ধেরও বড় সাী। এ কারণেই এলাকাবাসী এটি সংরণের দাবি জানিয়েছেন। এর আগে একবার বাড়িটি ভেঙে ফেলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। পরে প্রশাসনের কঠোর হস্তেেপ পিছু হটে স্বার্থান্বেষী মহল।

সারিয়াকান্দি উপজেলা সদর থেকে ছয় কিলোমিটার পশ্চিম-দেিণ হরিণা গ্রামে এই জমিদার বাড়ির অবস্থান। স্থানীয় বাসিন্দারা কাশি রায় জমিদারের বাড়ি হিসেবে এটিকে চেনেন।

ওই গ্রামের বাসিন্দা এবং জমিদার বাড়ির সাবেক কর্মচারী অমৃত লাল সাধু (৮৫) জানান, জমিদারবাড়ি ছিল চারদিকে প্রাচীরঘেরা। চারপাশে আবার বিশাল আকৃতির চারটি লোহার দরজাও ছিল। বাড়ির ভেতরের দণিাংশে ছিল একটি প্রাচীন দুর্গা মন্দির। এর দেয়ালে ছিল নানা ধরনের কারুকাজ। দুর্গা মন্দির হলেও সেখানে সব ধরনের পূজারই আয়োজন করতে দেখেছেন তারা।

তিনি আরও জানান, এই মন্দিরে সেসময় স্বরস্বতী পূজার আয়োজন করা হতো। আর এই পূজাকে ঘিরে পাশের স্কুল মাঠে বসত শ্রী পঞ্চমীর মেলা। এখন জমিদাররা না থাকলেও তাদের প্রচলিত শ্রী পঞ্চমীর মেলা এখনো চলে আসছে ওই গ্রামে। জমিদার কাশিপ্রসাদ রায়ের জমি ছিল প্রায় আড়াই হাজার বিঘা।

জমিদার কাশিপ্রসাদ রায়ের ছিলেন দুই ছেলে এবং দুই ভাতিজা। তারা হলেন উপন্দ্রে লাল রায় ও রাজেন্দ্র লাল রায় এবং যোগেন রায় ও দেবেন রায়। এ অঞ্চলে তারা জমিদারি করলেও মূল জোতের মালিক ছিলেন নাটোরের জমিদার। ভারত বিভক্তির আগে খাজনা বাকি পড়ার কারণে নিলামের মাধ্যমে কাশিরায়ের কাছ থেকে জমিদারি প্রত্যাহার করে নেন নাটোরের জমিদার। এর পর তারা ভারতে চলে যান। মুক্তিযুদ্ধের আগে পর্যন্ত বাড়িটিতে কেউ থাকতেন না। এর পর মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে এই বাড়ি মুক্তিযোদ্ধাদের ঘাঁটিতে পরিণত হয় বলে স্থানীয়রা জানান।

তারা আরও জানান, মুক্তিযুদ্ধের পরবর্তী সময়ে ওই বাড়ির এক সময়ের কর্মচারী সিফাত প্রামাণিকের ছেলেরা বাড়িটি কিনে নিয়েছেন বলে এলাকায় প্রচার করেন। এর পর থেকে তারাই সেখানে বসবাস করতে শুরু করেন। এক পর্যায়ে (প্রায় ১৫ বছর আগে) তারা ওই বাড়ির ভেতরে অবস্থিত প্রাচীন মন্দিরটি ভেঙে ফেলেন। তবে মন্দিরের উত্তরপাশের দেয়ালটি এখনো অক্ষত রয়েছে।

ওই বাড়ির আরেক কর্মচারী হরিণা নতুন পাড়ার বাসিন্দা আজেম উদ্দিন (বয়স একশ পেরিয়েছে বলে তার দাবি) জানান, তিনি ওই বাড়িতে গরু-মহিষের যতœ করতেন। তিনি বলেন, বাড়ির ভেতরে বাইরের মানুষের যাওয়ার কোনো সুযোগ ছিল না। তিনি বাড়ির লোকদের শারীরিক গঠনের বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, যেমন জমিদারবাড়ি, তেমনি সেই বাড়ির মানুষের চেহারা-সুরত। জমিদার বাবু (কাশিরায়) মন্দিরের পাশের বৈঠকখানায় বসতেন।

স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে রতন কুমার সরকার বলেন, এটি তো এলাকার বিশাল ঐতিহ্য। এটিকে রা করা সরকারের উচিত।

মোস্তাফিজার রহমান নামের আরেকজন বলেন, দুইশ বছর আগের এই বাড়িটি পড়ে থেকে বিলীন হতে চলেছে। পড়ে থাকায় ছেলেমেয়েরা এর ইতিহাস জানতে পারছে না।

কলেজছাত্র সবুজ কুমার সরকার ও শামীম আহম্মেদ শাহীন দাবি করেন, তাদের ইতিহাস জানার জন্যই বাড়িটি সংরণ করতে হবে।

গ্রামবাসী শহীদুল ইসলাম বাবলু বলেন, যেহেতু এতদিন বিষয়টি আলোচনায় আসেনি, তাই তা নিয়ে কেউ মাথাও ঘামায়নি। এখন সরকারের উচিত বাড়িটি সংস্কার করে সংরণের ব্যবস্থা করা।

সারিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মনিরুজ্জামান জানান, প্রাচীন বাড়ি হিসেবে এটি সংরণের দায়িত্ব প্রতœতত্ত্ব বিভাগের। তবে আমি এখানে নতুন এসেছি। এ বিষয়ে আমার জানা নেই। অচিরেই আমি জমিদার বাড়িটি পরিদর্শন করব। পরে তা সংরণের জন্য প্রতœতত্ত্ব বিভাগকে চিঠি দেওয়া হবে।

এনিয়ে প্রতœতত্ত্ব বিভাগের আঞ্চলিক পরিচালক নাহিদ সুলতানার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি কেউ আমাদের জানায়নি। দুশ বছরের পুরাতন বাড়ি হয়ে থাকলে অবশ্যই তা সংরণের উদ্যোগ নেওয়া হবে।